বৃহস্পতিবার ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

জার্মানির কলোনে অভিবাসন-বিরোধীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

প্রকাশিতঃ ১০ জানুয়ারি, ২০১৬  

জার্মানির কলোনে অভিবাসন বিষয়ক ‘খোলা দরজা’ নীতির বিরোধীতা করে ডাকা একটি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।

শনিবার ইসলাম-বিরোধী উগ্র-ডানপন্থি গোষ্ঠী পেগিডা আন্দোলন এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে প্রায় ১৭০০ লোক উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, দ্য ইন্ডিপিন্ডেন্ট, বিবিসি।

নতুন বছরের প্রাক্কালে কলোনে নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় শরণার্থীদের জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে আসার পর পেগিডার এই প্রতিবাদ সমাবেশটি হল। ‘প্রটেকশনের’ জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে সমাবেশটির ডাক দেয় পেগিডা।

এতে পেগিডা ছাড়াও অভিবাসন-বিরোধী আরও কয়েকটি গোষ্ঠীর সমর্থকরা যোগ দেয়।

বিরোধীতা সত্বেও জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের নীতির কারণে ২০১৫ সালে প্রায় ১১ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেয় জার্মানি। কিন্তু বছর শেষে নতুন বর্ষবরণের সময় দেশটির কলোন শহরে নারীদের যৌন নিপীড়ন ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

তদন্তে এসব ঘটনার সঙ্গে শরণার্থী বিশেষভাবে উত্তর আফ্রিকীয় ও আরব শরণার্থীরা জড়িত বলে প্রকাশ পায়।

এর প্রতিক্রিয়ায় মের্কেল সরকার অভিবাসন নীতি কঠোর করার ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু যৌন নিপীড়নে শরণার্থীদের জড়িত থাকার অভিযোগে মের্কেলের অভিবাসন নীতি ভ্রান্ত প্রমাণ হয়েছে বলে দাবি করে পেগিডা।

প্রতিবাদকারীরা ‘মের্কেল চলে যাও’ এবং ‘এই মিছিল জাতীয় প্রতিরোধের মিছিল’ বলে শ্লোগান দেয়। একটি ব্যানারে ‘রেপয়িউজিদের স্বাগতম নয়’ লেখা শ্লোগানও ছিল।

কিন্তু বিপুল সংখ্যক বিরোধী বিক্ষোভকারী উগ্র-ডানপন্থিদের সমাবেশের প্রতিবাদে পাল্টা সমাবেশে করে। পেগিডা বিরোধীরা যৌন সহিংসতা, বর্ণবাদ এবং ইসলামভীতি বিরুদ্ধে এবং নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে থাকা শরণার্থীদের অধিকারের পক্ষে শ্লোগান দেয়।

শহরের একটি চত্বরে দুপুর ২টায় পেগিডার সমাবেশ শুরু হওয়ার প্রায় দুই ঘন্টা পর ওই স্থানটি খালি করার জন্য দাঙ্গা পুলিশ পাঠায় কর্তৃপক্ষ। জলকামান ও পেপার স্প্রে ব্যবহার করে পুলিশ অভিবাসন বিরোধী দেড় হাজার সমাবেশকারীকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ সময় অভিবাসন-বিরোধী কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে বোতল, পাথর ও ফুলের টব ছুঁড়ে মারে। তারা পুলিশের স্থাপন করা ধাতুর বেষ্টনি ভেঙে ফেলে এবং রাস্তায় আগুন ধরায়। এসব দাঙ্গাবাজকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে পুলিশ।

এর কয়েকশ মিটার দূরে পেগিডা বিরোধীরা পুলিশ বেষ্টনির একপাশে অবস্থান নিয়ে ‘বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে’, ‘ফ্যাসিজম নয়’ এবং ‘কখনো না’ শ্লোগান দেয়।

পেগিডা সমর্থকদের দাঙ্গা চলার সময় পুলিশ সেখান থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করে বলে খবর পাওয়া গেছে। রয়টার্স দুজন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলোনের কেন্দ্রস্থলে এক হাজার ৭০০ পুলিশ মোতায়েন ছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশের এক মুখপাত্র।

আরও পড়ুন