পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়িঘর দখল ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ
প্রকাশিতঃ ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
যশোরে শত বছর ধরে বসবাসকারী ৪০ পরিবারকে উচ্ছেদ করে পুলিশ ক্লাব নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শহরের গাড়িখানায় নতুন দেয়াল তুলে কয়েকটি দোকান দখল করে পুলিশ ক্লাবের নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে অভিযোগ করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মানবাধিকার সংস্থা রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ১৯১০ সালে শহরের গাড়িখানা রোড এলাকায় কিছু সরকারি জমি বরাদ্দ নেন গোপীনাথ রায় চৌধুরী, মাসুদ আলম, আসাদুজ্জামান শিপলুসহ বেশ কজন এবং বর্তমানে ৪০টি পরিবার বংশানুক্রমে ভোগদখল করে আসছেন।
“কিন্তু পুলিশ হঠাৎ জায়গাটি নিজেদের দাবি করে। পরে বিচারিক আদালতে পুলিশ হেরে যায়। বর্তমানে মামলাটি জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন। বুধবার রাতে পুলিশ বেশ কয়েকটি দোকান দখল করে দেয়াল তুলে পুলিশ ক্লাবের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে এবং পরিবারগুলোকে হুমকি-ধমকি দিয়ে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সরে যেতে বলছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক আরও জানান, জেলা প্রশাসক পুলিশ প্রশাসনকে এভাবে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চালাতে নিষেধ করেছেন।
“মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানও আইনবহির্ভূত উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ডিসি ও এসপিকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু তা মানছে না পুলিশ।”
এছাড়া পুলিশ বুধবার রাতে ওই এলাকায় বোমাবাজি করে পরিবারগুলোর নিরীহ মানুষদের আসামি দেখিয়ে মামলা করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
এদিকে, পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র এএসপি মীর মো. সাফিন মাহমুদ ১ দশমিক ২০ একরের এই জমিটি সাংবাদিকদের কাছে পুলিশের বলে দাবি করেন। আবার এ-ও বলেন, “সরকারি জমি উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে।”
আদালতে মামলা চলাকালে উচ্ছেদ অভিযান বিধিসম্মত কি না এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “দখলকারীরা জাল দলিল দেখিয়ে মামলা করেছেন। তাই সরকারি স্বার্থে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।”
অন্যদিকে, আইনবহির্ভূতভাবে ঘরবাড়ি দখলের এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যশোরের বিশিষ্টজনরা। উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও যশোর জেলা সভাপতি ইকবাল কবির জহিদ, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির যশোর জেলা সভাপতি ও আইনজীবী আবুল হোসেন, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের জেলা সম্পাদক তসলিম-উর-রহমান ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) জেলা সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার রায়।