শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

যে ভাষণে কেঁপেছিল ধরণী

প্রকাশিতঃ ০৭ মার্চ, ২০১৬  

রাজনীতির কবি তিনি। সেদিন রাজনীতির কবিতাই শুনিয়েছিলেন। অমন তেজদীপ্ত কণ্ঠে ধরণীতে আর কোনো কবি কখন-ই কবিতা পাঠ করেননি। আর শ্রোতারাও ছিলেন মুগ্ধ। যে কবিতার শক্তি সঞ্চয় করে বীর বাঙালি অস্ত্র ধরেছিল হাজার বছরের বঞ্চনার বিরুদ্ধে। এদিন-ই মুক্তির ঝাণ্ডা উড়িয়ে বাঙালি তার স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে মরণপণ শপথে নেয়।

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমর ভাষণের জন্য এই দিনটি ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) লাখো মানুষের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।

তার এই ঐতিহাসিক ভাষণের পর স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আর কোনো প্রয়োজন মনে করেনি মুক্তিকামী মানুষেরা। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার আহ্বানের অধীর অপেক্ষায় ছিল বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটায়। স্বাধীনতার যে ডাক তিনি দিয়েছিলেন, তা বিদ্যুৎ-গতিতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

সেদিন বেলা ৩টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত হন। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ময়দান ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। স্লোগান ছিল পুরো ময়দানজুড়ে ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’। উপস্থিত জনতাকে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’। ১৯ মিনিটের সেই ভাষণ মুক্তিযুদ্ধে দারুণ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। আজও অনেকের কাছে তা অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে।

রাষ্ট্রীয়ভাবে আজকের দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনও ৭ মার্চ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেছেন, ‘অসীম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অমিত শক্তির উৎস ছিল এ ঐতিহাসিক ভাষণ। যার আবেদন আজও অটুট আছে।’

আওয়ামী লীগ আজ (সোমবার) সকালে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করবে এবং বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবে।

বেলা ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া আওয়ামী লীগের সব শাখা কমিটি ৭ মার্চ এর স্মরণে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি পালন করবে।Mujib-7th-march20160306210811