শিশু জিহাদের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উম্মোচন, বাবা ও সৎ মাসহ গ্রেপ্তার ৪
প্রকাশিতঃ ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০
অনলাইন প্রতিবেদক: দেড় মাস পর অজ্ঞাতনামা শিশুর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই পুলিশ। গত ১৬ জুলাই নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার রামডাঙ্গা ফরেস্ট ও সিংগাহাড়া নদীর তীরে একটি তালাবদ্ধ ট্রাংক থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশুর পরিচয় ও হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবা ও সৎ মাসহ আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রংপুর পিবিআই কার্যালয়ে পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানান, চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ছিল ক্লুলেস। থানা পুলিশ তদন্তের পর আমরা এটি তদন্তের ভার পাই। এরপরই আমাদের একটি স্পেশাল টিম তথ্য প্রযুক্তি ও একাধিক বিশ্বস্ত সোর্সের যথাযথ ব্যবহার করে প্রায় এক মাস ১৭ দিন পর অপরাধের মোটিভ, প্রক্রিয়া ও মৃত ব্যক্তির পরিচয় নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের সনাক্ত করতে সক্ষম হই। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে দিনাজপুরের খানসামার একটি এনজিওতে কর্মরত হত্যাকাণ্ডের শিকার জিহাদের বাবা জিয়াউর রহমানকে গ্রেফতার করি। পরে তার স্বীকারোক্তিতে বিরলের ভাড়া বাসার তৃতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে জিয়াউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী ও শিশু জিহাদের সৎ মা আলেয়া মনি (১৯), শ্বশুর আইয়ুব আলী(৫৫) এবং লাশ গুমের সাথে ব্যবহৃত নীল পিক-আপ (রেজিঃ নং ঢাকা মেট্রো ন-১১-৯৬০৭) জব্দ এবং পিক আপের মালিক ও ড্রাইভার ইসমাইলকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও জিয়াউরের ভাড়া বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ইলেক্ট্রিক ওয়াটার হিটার জব্দ করা হয়।
পিবিআই পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন জিহাদকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য গরম পানি নিক্ষেপ করে তার শরীর বিকৃত করা হয়। গত ১৫ জুলাই সকাল বেলা হত্যার ঘটনা গোপন করতে তার বাসায় ব্যবহৃত একটি স্টিলের ট্র্যাংকে বাবা জিয়াউর রহমান, সৎ মা আলেয়া মনি ও শ্বশুর আইয়ুব আলী বেডশীট ও কাঁথায় শিশু জিহাদের লাশ পেঁচিয়ে ট্রাংকের ভিতরে ঢুকায়। আইয়ুব আলী পার্শ্ববর্তী মীম ভ্যারাইটিজ স্টোর হতে দুটি চাইনিজ তালা কিনে এনে ট্রাংকটি তালাবদ্ধ করে। এরপর জিয়াউর রহমান লাশ ভর্তি ট্রাংকটি অপসারণের জন্য বিরল হাসপাতালের গেটের সামনে হতে একটি নীল রঙের ছোট পিক আপ ভ্যান ১৩ হাজার টাকায় ভাড়া করে। এবং ওই রাতেই নীলফামারীর ডিমলার রামডাঙ্গা ফরেস্ট ও সিংগাহাড়া নদীর তীরে রেখে আসে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, বনিবনা না হওয়ায় সৎ মা আলেয়া মনি ও তার বাবা জিয়াউর রহমান গত ১৪ জুলাই রাতের ঘুমন্ত শিশু জিহাদকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
মামলাটি পিবিআই রংপুর জেলায় কর্মরত এসআই মোঃ ইকরামুল হক তদন্ত করছেন।