মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ৯ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

অবশেষে নৌকার পক্ষে মাঠে নামার ঘোষণা দিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান ’

প্রকাশিতঃ ১০ জানুয়ারি, ২০২২  

জেলা প্রতিনিধি:অবশেষে নৌকার পক্ষে মাঠে নামার ঘোষনা দিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জে নৌকা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নাই বলেও মনে করেন তিনি। এমনকি তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত হবে। কিন্তু তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শুরুতে নিরব ভ‚মিকা পালন করার কারনে তাকে নিয়ে দলীয় ভাবে নানা সমলোচনা সহ আলোচনা সৃষ্টি হয়।

আইভীর সাথে শামীম ওসমানের অন্ত:কোন্দেেলর কারনে নৌকার প্রার্থী আইভীর পক্ষে কথা না বলার কারনে শামীম ওসমানকে নিয়ে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় ভাবে নানা ধরনের মন্তব্য শুরু হয়। এমনকি বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী এড. তৈমুর আলম খন্দকার শামীম ওসমানের সমর্থীত প্রার্থী হিসাবে নগরীতে গুঞ্জন চলতে থাকে। শামীম ওসমানের উপর তকমা লাগানোর বিষয় দেয়ায় তাকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়।

এমনকি আওয়ামীলীগের প্রার্থী ডা: সেলিনা হায়াত আইভীও শামীম ওসমানকে গডফাদার হিসাবে উপাধী দিয়েছেন এবং তার সমর্থীত প্রার্থী হলো বিএনপি নেতা স্বতস্ত্র প্রার্থী এড. তৈমুর আলম খন্দকার। শামীম ওসমানকে নিয়ে এতো আলোচনা সমলোচনার পর শামীম ওসমান এতোদিন তিনি মুখ না খুললেও সোমবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাহার অবস্থানের কথা পরিস্কার করলেন।তিনি বলেন, কোনো দল-মতের কারণে আমি রাজনীতিতে আসিনি। রাজনীতি করতে এসেছি জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে এবং বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে রাজনীতি করতে এসেছি। আমি নৌকার বিরুদ্ধে না, নৌকা প্রতীক আমাদের রক্ত দিয়ে কেনা। আজ থেকে নৌকার হয়ে মাঠে নামলাম। সোমবার (১০ জানুয়ারি) বেলা ২টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বাধন কমিউনিটি সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান এমন ঘোষনা দেন। আগামী ১৬ তারিখ খেলা হবে এবং খেলা দেখা যাবে’ মন্তব্য করে শামীম ওসমান আরও বলেন, নির্বাচনের মাঠে নামতে পারব না, আইনে নিষেধ আছে। আমরা আইন করবো আমরাই মানবো না, সেটা কেমনে হয়।

এই আইনটা বাতিল করে দেওয়া উচিত। কারণ সবাই লুকিয়ে লুকিয়ে নামছে। আমাকে নিয়ে টুইস্ট করে নিউজ করা হচ্ছিল। সে কারণেই প্রেস কনফারেন্স করলাম। ১৬ তারিখ খেলা হবে এবং খেলা দেখা যাবে এবং এই খেলায় আমাদেরই জয় হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আসলেই আমাকে নিয়ে অলোচনা শুরু হয়। নির্বাচনের সময় আমি কেনো সাবজেক্ট ম্যাটার হবো, জানতে চাই। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন একটা ছোট করপোরেশন। এখানে তৃনমূলের রাস্তা থেকে উঠে আসা নেতারা আছেন। তিনি আরও বলেন, আমি সত্য কথা বলতে পছন্দ করি। কিন্তু সব সত্য তো আর বলতে পারবো না।

সেজন্য আমি আমার বিবেকের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য। এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। আমি এই কয়দিন চুপ ছিলাম একটা কারণে। এই ভেবে যে, এইটা আমার কাজ না। কিন্তু চুপ থাকায় বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে। দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। কেউ দলের উল্টা দিকে থেকে হেঁটে ক্ষতি করছে, কেউ দলে থেকে ক্ষতি করছি। তাই আজকে ভাবলাম কথা বলাটা উচিত। সামনে যেদিন আসছে, কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। ছাত্রলীগের মনে কষ্ট দিয়েন না। দুঃসময়ে তারাই এগিয়ে এসেছিল। নির্বাচন ধমক দিয়ে হয় না। একে অপরকে দোষারোপ করে নির্বাচন হয় না। সব রাগ অভিমান ছেড়ে দিয়ে কাজ করতে হবে। সবার ঘরে ঘরে যেতে হবে। এই ঘাঁটি নৌকার, এ মাটি আওয়ামী লীগের। জয় আমাদের হবেই। সংবাদ সম্মেলনে তৈমুর আলম খন্দকারকে উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান বলেন, আপনি আপনার মত কাজ করেন। হাতি দিয়ে নৌকা ডুবায় দেবেন তা হবে না। হাতি নৌকায় উঠতে দেব না। নৌকায় ওঠার আগেই হাতি কাঁধে উঠিয়ে দৌড় দেবো। নারায়ণগঞ্জে জামায়াত-বিএনপির অত বড় শক্তি নাই, নৌকা ডুবানোর। তিনি বলেন, গত ৭/৮ বছর ধরে একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। আমার জীবনে আমি এত কাঁদিনি তবে, কবরস্থানের ঘটনায় আমি অনেক দুঃখ পেয়েছি। আমি আশা করেছিলাম অন্তত একটি তদন্ত কমিটি হবে, তা না হয়ে বরং আমার বিরুদ্ধে প্রেস রিলিজ দিচ্ছে।

এটাও তাদের কথায় যারা লিফলেটে নৌকা না লিখে প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছে। আমি নীলকণ্ঠী। আমার দায়িত্ব আমার নেত্রীকে ফলো করা। কেউ বলে শান্তি পেলে পাক, তাতে আমার কী। উনি কী বলছেন সেটা তার ব্যাপার। যারা নির্বাচন পরিচালনা করেছেন, আমার জাতীয় পর্যায়ের নেতারা এসে নির্বাচন পরিচালনা করছেন। তারা বলেছেন, এটা বিএনপি-জামায়াতের নতুন চাল। এখন আমি কারটাকে সঠিক বলবো। ১৬ তারিখ নৌকা বিজয়ী হওয়ার পর তার প্রশ্নের উত্তর দেব।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চন্দন শীল, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহসিন মিয়াসহ শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু প্রমুখ।